ঢাকা: দেশে প্রা,ণঘা,তী করোনাভাইরাসে আ,ক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫৩ জনের মৃ,ত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃ,ত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৬৫ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৬১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭ জনে।
রোববার (৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে শনিবার করোনায় মৃ,ত্যু হয়েছিলো ১৩৪ জনের। আর নতুন করে ওইদিন শনাক্ত হয়েছিলো ৬ হাজার ২১৪ জনের। এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রা,ণহা,নির সংখ্যা কমছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মা,রা গেছেন ৬ হাজার ৯৭৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃ,ত্যু কমেছে ১২০০-র বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃ,তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৫ জনে।
কঠোর লকডাউন কার্যকরের লক্ষ্যে প্রশাসন নানামুখী উদ্যোগ দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বরিশালের সকল খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন। এতে বড় ধরনের ভোগান্তির মধ্যে পরেন বিভিন্ন হাসপাতলে ভর্তি রোগীর স্বজনরা। বিশেষ করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতা’লের রোগীর স্বজনরা। রোগীদের খাবার হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হলেও ভোগান্তির শেষ ছিল না স্বজনদের।
নগরীর সকল হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় একই দুর্ভোগে আছেন তারা। খাবার না পেয়ে মহাসংকটে পড়া শেবাচিম হাসপাতা’লে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনদের পাশে দাঁড়িয়েছেন হাসপাতা’লের সামনের হোটেল মালিকরা। তারা খিচুড়ি রান্না করে রোগীর স্বজনদের মাঝে গতকাল শনিবার থেকে বিনামূল্যে বিতরণ করছেন। আজ রবিবার দুপুরেও হাসপাতা’লের মূল গেট সংলগ্ন হোটেলগুলোর সামনে বিনামূল্যে এই খিচুড়ি বিতরণ কার্যক্রম চলে। লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রোগীর স্বজনরা সেই খিচুড়ি সংগ্রহ করছেন। খিচুড়ি সংগ্রহ করতে আসা ফাতেমা বেগম, আকলিমা আক্তার, ইউসুফ ব্যাপারী জানান, বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসার জন্য তাদের স্বজনদের হাসপাতলে ভর্তি করেছেন।
লকডাউনের কারণে গ্রাম থেকে তাদের স্বজনরা আসতে পারছেন না। তাই শহরের আনাচে কানাচে থাকা আত্মীয়দের কাছ থেকে খাবার সহযোগিতায় পাচ্ছেন না। তাই যারা আছেন, তারাই রোগীর পাশে থাকছেন। খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় তারা সংকটে পড়েছেন। হাসপাতাল সূত্র বলছে, প্রতিদিন গড়ে দেড়সহস্রাধিক রোগী হাসপাতা’লে থাকছেন। প্রতি রোগীর সঙ্গে সহযোগিতার জন্য গড়ে তিনজন করে স্বজন থাকছেন। সে হিসেবে প্রতিদিন শেবাচিম হাসপাতা’লে পাঁচ সহস্রাধিক রোগী ও স্বজন থাকছেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র রোগীদের খাবার সরবরাহ করা হয়। খাবারের মান নিয়ে সবসময় প্রশ্ন উঠছিল। তাই বেশির ভাগ রোগী সেই খাবার খাচ্ছেন না। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা রোগী ও স্বজনরা হাসপাতা’লের সামনের এলাকার হোটেল থেকে তিন বেলা খাবার কিনে খান। প্রশাসন হোটেলগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই খাবার সংকটে পড়েন রোগী ও স্বজনরা।
শেবাচিম হাসপাতাল সংলগ্ন বাঁধ রোডের একটি হোটেলের মালিক পবিত্র দেবনাথ। তিনি বলেন, হাসপাতা’লের আশপাশে ৯টি খাবার হোটেল রয়েছে। শেবাচিম হাসপাতা’লে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের বেশির ভাগই তিন বেলা খাবারের চাহিদা মেটান হোটেলগুলো। শুক্রবার রাতে পু’লিশ সদস্যরা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হোটেলগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। ফলে শনিবার থেকে হাসপাতাল এলাকার সবগুলো খাবার হোটেল বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, শনিবার সকালে হোটেল বন্ধ দেখে খাবার নিতে রোগীর স্বজনরা খাবার সংকটে পরেন। খাবারের জন্য হইচই শুরু করে দেন। ঝুপড়ি চায়ের দোকানের রুটি-কলা মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এসব মানুষের দুর্দশা দেখে হোটেল মালিকরা চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে শনিবার থেকে বিনামূল্যে বিতরণ শুরু করেন। রোগীদের স্বজনরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সকালের খিচুড়ি সংগ্রহ করেন। কিন্তু দুপুর থেকে পরবর্তী বেলার খাবারের সংকট রয়েই গেছে।