কালের কণ্ঠের বিজ্ঞাপন বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজার মো. মাসুদ আলমের মা খায়রুন নেসা শে,ষ নিঃশ্বা,স ত্যা,গ করেন গত মঙ্গলবার বিকেল ৬টায়। হৃ,দয,ন্ত্রের ক্রি,য়া বন্ধ হয়ে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি ই,ন্তেকা,ল করেন। গতকালই বাদ এশা জিগাতলা মসজিদে জা,নাজা শেষে নোয়াখালীর বসুরহাটের নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মাসুদ আলম। মায়ের মৃ,ত্যুতে এমনিতেই মা,নসিকভাবে ভে,ঙে পড়েছেন পুত্র-স্বজনরা। তারওপর মায়ের মৃ,তদে,হ নিয়ে গ্রামের বাড়ির যাত্রাটা তার কাছে আরেক দুঃ,সহ য,ন্ত্রণা হয়ে দেখা দিয়েছে।
মাসুদ আলম পরিকল্পনা সাজিয়ে নেন। বুধবার সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জা,নাজা শেষে স্থানীর ক,বরস্থা,নে মাকে দা,ফন করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় রাজধানীর ঝিগাতলা থেকে রওনা দেন তারা। কিন্তু লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে মৃ,ত মাকে নিয়ে গ্রামের যাওয়ার পথটাও যেন রু,দ্ধ! তারা দুটো গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছেন নোয়াখালির কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের উদ্দেশে। একটি গাড়ি লা,শবা,হী ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স। ঢাকা থেকে গাড়িতে সর্বোচ্চ ৪ ঘণ্টা লাগার কথা। এখন লকডাউনের সময়। কাজেই রাস্তাটা ফাঁ,কাই থাকবে ভেবেছিলেন। কিন্তু চরম বিড়ম্বনায় পড়লেন পথে। নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ ব্রিজের পথে যেতেই আ,টকে গেলেন। ব্রিজের কাজ চলছে, বন্ধ। কাজেই ওপথে আর যাওয়ার উপায় নেই। কিন্তু ওই পথে যতদূর এগোলেন তার মধ্যে কোনো পুলিশ বা সার্জেন্টকে চোখে পড়েনি। থাকলে তারা হয়তো বলতে পারতেন রাস্তাটা বন্ধ। তাহলে আর ভুল পথে যেতে হতো না। কিংবা কোনো সতর্কীকরণ নোটিশও ছিল না কোথাও।
যদিও ১১ জুলাই সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পরদিন অর্থাৎ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ সেতু ব্যবহার না করার অনুরোধ করে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ। বিভাগটি জানায়, এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত ডেক স্ল্যাব মেরামতের কাজ করা হবে। এই সময়ে তারা যানবাহনকে বিকল্প রুট ব্যবহারের অনুরোধ করেছে। মেরামতের কাজ হবে কাঁচপুর ও মেঘনা সেতুর মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত লাঙ্গলবন্দ সেতুর ১৭ কিলোমিটার স্থানে।
কিন্তু এই নোটিশ কয়জনই আর দেখেছেন। যারা সেই পথে চলাচল করছেন তাদের জন্য এই নোটিশ পথেই দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন মাসুদ আলম। যাইহোক গাড়ি ঘুরিয়ে বিকল্প পথে এগোলেন। আজ সকালের জা,নাজা যথাসময়েই করতে চান তিনি। কাঁচপুর ও মেঘনা সেতুর মাঝামাঝি লাঙ্গলবন্দের মেরামতের জন্যে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কাঁচপুর-ভুলতা-নরসিংদী-ভৈরব ব্রিজ-সরাইল-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা মহাসড়ক। সে পথে নরসিংদীতে গিয়েই যেন নরকে গিয়ে পড়লেন। তীব্র যানজট। ওই পথে সব পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক-লরি চলছে। অদ্ভুদ বিষয়টি হলো, পথে কোথাও কোনো ট্রাফিক-সার্জেন্টের কোনো উপস্থিতি দেখলেন না তিনি। দুই গাড়িতে ১০ জন নোয়াখালি যাচ্ছেন তারা। গাড়িতে আছেন ৩ জন নারী আর ৩টি শিশু। তাদের নিয়ে এক জায়গাতেই ঠায় ৫ ঘণ্টা আটকে থাকতে হলো।
মাসুদ আলম জানান, এ এক দুর্বিষহ পরিস্থিতি। বাচ্চা আর মহিলারা সবাই রীতিমতো অসুস্,থ হয়ে গেছে। এই পথে কোথাও টয়লেটের ব্যবস্থা নেই, মায়ের লা,শ নিয়ে পথে বসে ছিলাম পুরো ৫ ঘণ্টা। অবাক হয়েছি রাস্তায় কোনো ট্রাফিক পুলিশকে না দেখে। তাদের তৎপরতা থাকলে হয়তো এমন অবস্থা হতো না। লা,শবা,হী অ্যা,ম্বুলেন্সকে যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একটু এগিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে তার কোনো সুযোগই নেই। বাধ্য হয়ে তিনি ৯৯৯-এ ফোন দেন। তিনি এই দুঃসহনীয় পরিস্থিতির কথা জানান। মূলত সেখানে কোনো সার্জেন্ট বা আ,ইনশৃ,ঙ্খলা র,ক্ষাকারী বাহিনীর কেউ নেই- এ তথ্যটাই দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোনো সদুত্তর মেলেনি।
আজ সকাল সাড়ে ১১টায় কথা হয় মাসুদ আলমের সঙ্গে। তিনি জানালেন, যানজট থেকে বেরিয়ে গাড়ি এখন চলছে। তবে রাস্তা ফাঁকা হয়নি। গাড়ি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটারের বেশি চলছে না। এখন তিনি জানেন না আসলে কখন বাড়ি পৌঁছবেন। জা,নাজার গোটা আয়োজন পি,ছিয়ে দিতে হয়েছে। বাদ জোহরের পরিকল্পনা করেছিলেন। তাও সম্ভব হবে না হয়তো। এখন বাদ আসর করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার (১৪ জুলাই) যানবাহনের তীব্র চাপের কারণে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে অন্তত ৫০ কিলোমিটার পথজুড়ে থেমে থেমে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শত শত যানবাহনের চালকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে আছেন। গার্মেন্টস পণ্যবাহী গাড়ি, কোরবানির পশু এবং আমবাহি শত শত গাড়ি আ,টকে রয়েছে পথে।