‘নৌকা ডুইব্বা জাঅনের সম মা আমারে ঠেলা দিয়া একটা লোকের কাছে দিয়া দিছে। পরে অই লোকটা আমারে পাড়ে লইয়া আইছে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ছয় বছরের শিশু মন্দিরা বিশ্বাস এভাবেই বলছিল। মামা পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে কৌশলী আলাপচারিতায় মিনিট খানেক কথা বলে মন্দিরা।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে ট্রলারডুবির ঘটনায় মন্দিরার মা অঞ্জনা বিশ্বাস (৩০) ও আড়াই বছর বয়সি বোন ত্রিদিবা বিশ্বাস মারা যায়। তবে সাঁতরে তীরে উঠে বেঁচে গেছে মন্দিরার বড় ভাই সৌরভ বিশ্বাস (১৭)।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনা বিশ্বাস তার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তার প্রবাসী ভাই হরিপদ বিশ্বাসকে দেখতে বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার গোকর্ণ ঘাটে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে লইসকার বিলের মনিপুর এলাকায় বালু বোঝাই ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কায় তাদের ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারের ভেতরের অংশে থাকা অঞ্জলি মেয়ে মন্দিরাকে নৌকার ফাঁক দিয়ে বালু বোঝাই ট্রলারে থাকা লোকদের হাতে তুলে দেন। মন্দিরাকে বের করে দিতে পারলেও অঞ্জলি ও তার আড়াই বছরের কন্যা ত্রিদিবা বিশ্বাস ট্রলার থেকে বের হতে পারেননি।
পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, মন্দিরার মনে এখন কি যেন একটা ভয় কাজ করছে। সে খুব একটা কথা বলতে চাইছে না। মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে। এটা সেটা বুঝিয়ে তাকে রাখা হচ্ছে। মন্দিরা এখনো জানে না তার মা আর বেঁচে নেই।