এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) ৬ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (আনিক) ও করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২২০টি ভবন ও নির্মাণাধীন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ২১টি ভবনে সর্বমোট ২১ মামলায় ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
আজ রবিবার (১১ জুলাই) করপোরেশনের ২-৫, ৯ ও ১০ নম্বর অঞ্চলের আনিকবৃন্দ ও সম্পত্তি বিভাগের দু’জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরীর বনশ্রী, আগামসি লেন, সেগুনবাগিচা আরামবাগ, বকশিবাজার, বিবির বাগিচা, ছনটেক, দক্ষিণ দনিয়া, এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অঞ্চল-২ এর আনিক সুয়ে মেন জো’র তত্ত্বাবধানে করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবির ত্রপা ও ইরফান উদ্দিন আহমেদ অঞ্চল-২ এর আরামবাগ, সেগুনবাগিচা ও বনশ্রী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবির ত্রপা ১১ নং ওয়ার্ডের সেগুনবাগিচা ও আরামবাগ এলাকায় ৫০টি ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় আরামবাগের ৭২ নং হোল্ডিংয়ের অগ্রণী ব্যাংকের নিমাণাধীন ভবনকে ১ লাখ ও আরেকটি নির্মাণাধীন ভবনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ আজ বনশ্রী, দক্ষিণ বনশ্রী, ফরাজি হাসপাতালের পিছনে ‘এ ব্লক’ থেকে ‘ই ব্লক’ পর্যন্ত এলাকায় ৪৫টি ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় ৩টি ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় এবং ১টি ভবনে পানি জমা থাকতে দেখায় সর্বমোট ৪ মামলায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করেন।
অঞ্চল-৩ এর আনিক বাবর আলী মীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বকশিবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে তিনি ১৫টি স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং উমেষ দত্ত রোডের একটি নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অঞ্চল-৪ এর আনিক মো. হায়দর আলী ৩৩ নং ওয়ার্ডের আগামসি লেনের ৪৪ নং হতে ৬৩ নং হোল্ডিংয়ের ২১টি বাড়ি ও নির্মাণধীন ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় ৫২/এ নম্বর ও ৫৭ হোল্ডিং নম্বরের ভবন ও ভবনের রিজার্ভ ট্যাংকে মশার লার্ভা পাওয়ায় মোট ৯০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অঞ্চল ৫ এর আনিক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার ৪৮ নং ওয়ার্ডের বিবির বাগিচা এলাকায় ১০টি বাড়ি ও নির্মাণধীন ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় দুটি ভবনে লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অঞ্চল-৯ এর আনিক মো. খায়রুল হাসান ছনটেক, ইশা খাঁ ও শেখদি এলাকায় ৩০টি নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন। এ সময় ৫টি নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ৫ মামলায় ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অঞ্চল-১০ এর আনিক মোহাম্মদ মামুন মিয়া দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে আদালত ৪৯টি স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ১৪১৭ নং হোল্ডিংয়ের শাপলা কুড়ি স্কুলসহ মোট ৫টি ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। এছাড়াও ১৪টি বাড়ির মালিককে ছাদে জমে থাকা পানি ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
অভিযান আগামীকালও চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাদসিক।
সরেজমিনে হাসপাতাল গেট, আরামনগর বাজার, সিমলা বাজার, বাউসি বাজার, বয়ড়া বাজার, স্টেশন এলাকা, সিংগুয়া মোড়, চর জামিরা এলাকা, আদ্রা মাদরাসা মোড়, চর রৌহা বাজার, তারাকান্দি গেট পাড় এলাকা, একুশের মোড়, আওনা পুরাতন ঘাট, মহাদানের চেরাগালির মোড়, পিংনা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা যায়।
জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সারা দেশে চলছে লকডাউন। উপজেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলছে। পাশাপাশি প্রায় বাসাবাড়িতে দেখা দিচ্ছে জ্বর, সর্দি, ঠান্ডা, কাশি। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ। সেই সঙ্গে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা। করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী নাপা, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা এক্সট্রা, এইচ নাপা, নাপা সিরাপসহ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ। কিন্তু ফার্মেসিগুলোতে মিলছে না এ জাতীয় ওষুধ। কিছু ফার্মেসিতে পাওয়া গেলেও তা দ্বিগুণ দাম দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রোগীদের। তবে সরবরাহ কম থাকায় সংকট দেখা দিয়েছে বলে ফার্মেসি মালিকরা জানান।
আরামনগর বাজারে ওষুধ ক্রয় করতে আসা রবিউল ইসলাম, বেলাল মিয়া, রহিমা বেওয়াসহ আরো অনেকেই বলেন, বাড়িতে একের পর এক সবাই ঠান্ডা জ্বরে ভুগছে। বাজার নাপা ওষধ কিনতে আইছি দাম চায় বেশি। কোনো উপায় না পেয়ে ১০ টাকার ওষুধ ২০ টাকা দিয়েই নিতে হলো।